শরীরের হরমোন ঠিক রাখতে যে পাঁচ ধরনের খাবার খাবেন
শরীরের হরমোন ঠিক রাখতে যে পাঁচ ধরনের খাবার খাবেন তার সম্পর্কে জেনে নিন
আলোচনার মূল প্রেক্ষাপট
শরীরে হরমোন সঠিক কার্যকলাপ বজায় রাখতে আমাদের সুস্থ জীবনের জন্য অপরিহার্য
বিভিন্ন প্রক্রিয়া। যেমন বিপাক প্রজনন ঘুম এবং মানসিক স্বাস্থ্য নিয়ন্ত্রণে
গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। হরমোনের ভারসাম্য হীনতা বিভিন্ন স্বাস্থ্য সমস্যা
সৃষ্টি হতে পারে, শরীরের কার্যক্রম বজায় রাখা জরুরী নিচে হরমোনের কার্যকারিতা
বজায় রাখতে সহায়ক এমন পাঁচ ধরনের খাবারের তালিকা দেওয়া হলো। তার আগে বলে নাও
ভালো আমাদের শরীরে বিভিন্ন রকম পুষ্টি ঘাটতির কারণে বিভিন্ন রকম সমস্যা বা
অসুস্থতা দেখা দিতে পারে। তাই আমাদের উচিত হবে শরীরের হরমোন ঠিক রাখে কোন কোন
খাবার তালিকাযুক্ত করে প্রতিনিয়ত আমাদের খাদ্য তালিকায় রাখা উচিত।
দেখে নিন কোন কোন খাবার খেলে শরীরের হরমোন ঠিক থাকে
পূর্ণাঙ্গ আলোচনা
প্রতিদিন সকালে দুই কুয়া রসুন খান
প্রতিদিন সকালে দুই কুয়া রসুন খেলে হরমোনের ঘাটতি পূরণ হয়।তবে রসুন কিছু
ক্ষেত্রে হরমোন জনিত সমস্যা সমাধানের সহায়ক হতে পারে। রসুনে উপস্থিতি কিছু
উপাদান শরীরের হনুমান নিয়ন্ত্রণে পরোক্ষভাবে সাহায্য করতে
পারে। অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট সমৃদ্ধ রসুনের প্রচুর পরিমাণে থাকে যা শরীরের ফ্রি
রেডিক্যালের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করে হরমোনের গ্রন্থি সমূহকে ক্ষতির হাত থেকে রক্ষা
করে। ইনসুলিন সংবেদনশীলতা বৃদ্ধি ইনসুলিন এর কার্যকারিতা বাড়াতে সাহায্য
করে। যা ডায়াবেটিস রোগীদের জন্য উপকারী হতে পারে। যৌন হর মনের বৃদ্ধিতে
সহায়ক মহিলাদের যৌন সমস্যা বা এর স্বাস্থ্য উন্নত করতে পারে এবং যৌন
হরমোনের কার্যকারিতা বৃদ্ধিতে সহায়তা করে।
বাদাম স্বাস্থ্যের জন্য খুবই উপকারী একটি খাবার বিভিন্ন ধরনের বাদাম যেমন কাঠ
বাদাম, চিনা বাদাম, কাজু বাদাম, পোস্ত বাদাম ইত্যাদি আমাদের শরীরের বিভিন্ন রোগ
প্রতিরোধে সাহায্য করে এবং রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়। এছাড়া বাদাম শরীরে
প্রয়োজনীয় পুষ্টি ঘাটতি পূরণ করে এবং হৃদরোগের ঝুঁকি কমায়। মূল কথা হলো
ভেজানো বাদামের আসল উপকারিতা পাওয়া যায় শরীরের হরমোন ঘাটতি রক্ষার্থে। শরীরের
হরমোন ঘাটতি পূরণে সহায়ক ভূমিকা পালন করে ভেজানো বাদাম। তাই প্রতিদিনের খাদ্য
তালিকায় আমাদের ৪ থেকে ৫টি ভেজানো বাদাম খাওয়া উচিত।
লবঙ্গ একটি জনপ্রিয় মসলা, যা রান্না পাশাপাশি স্বাস্থ্য উপকারিতা সরবরাহ
করে।এন্টিঅক্সিডেন্ট এবং এন্টি ইনফ্লামেটরি বৈশিষ্ট্য সমৃদ্ধ। যা রোগ প্রতিরোধ
ক্ষমতা বৃদ্ধি হজম শক্তি উন্নক্ত করা এবং ব্যাথা কমাতে সহায়ক। কিছু গবেষণায়
দেখা গেছে লবঙ্গ পুরুষের মধ্যে ট্যাটোরেশন হরমোনের নিদর্শন বাড়াতে সাহায্য করে
যা যৌন উত্তেজনা এবং এর ক্ষমতা বাড়াতে পারে। লবঙ্গের সুগন্ধ মানসিক চাপ কমায়
এবং মনকে শান্ত রাখতে সাহায্য করে লবঙ্গের এন্টিঅক্সিডেন্ট এবং অ্যান্টি
ইনফ্লামেটরি বৈশিষ্ট্য লিভারকে সুস্থ রাখতে এবং কার্যকারিতা বাড়াতে
সাহায্য করে।
কিসমিস একটি শুকনো ফল স্বাস্থ্যের জন্য খুবই উপকারি কিসমিসে থাকা থাকা ভিটামিন
খনিজ এবং অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট সমৃদ্ধ খাবার তাই শরীরের হরমোন বাড়াতে এই
খাবারের জুড়ি মেলা ভার। শরীরের হরমোন বৃদ্ধির পাশাপাশি হজম ক্ষমতার
বৃদ্ধিতে সহায়ক। রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে শক্তিশালী কার্যকর ভূমিকা পালন করে
এবং হাড়ের স্বাস্থ্য ভালো রাখতে সহায়ক। এছাড়াও কিসমিসে থাকা প্রাকৃতিক শর্করা
দ্রুত শক্তি সরবরাহ করে আমাদের শরীরে তাই প্রতিদিন সকালে আমাদের উচিত দশ থেকে বার
টি কিসমিস প্রতিদিন খাওয়ার অভ্যাস গড়ে তোলা।
প্রতিদিন একটি করে এলাচ খান
প্রতিদিন একটি করে এলাচ খেলে অনেক উপকার পাওয়া যায়, এটি হজম শক্তি বাড়ায়
মুখের দুর্গন্ধ দূর করে রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণের সাহায্য করে। শ্বাসকষ্ট মানসিক চাপ
কমাতে সহায়ক এছাড়াও এলাচ ত্বকের যত্নে খুবই উপকারী। এলাচের উপস্থিতির পটাশিয়াম
এবং ম্যাগনেসিয়াম রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণের সাহায্য করে এলাচ শরীরএর ট্রনিক দূর করে
এবং ত্বককে উজ্জ্বল করে। এলাচ ত্বকের বিভিন্ন সমস্যা যেমন ব্রণ ফুসকুড়ি এবং
অন্যান্য প্রদাহ কমাতে সাহায্য করে। ওজন কমাতে সহায়তা করে সর্দি কাশি
ইত্যাদি উপশম হয়। এলাচ একটি প্রাকৃতিক উপাদান যার শরীরের জন্য অনেক উপকারী
প্রতিদিন একটি করে এলাচ খেলে স্বাস্থ্য ভালো থাকে।
শরীরের হরমোন ঠিক রাখতে আমরা বিভিন্ন ধরনের খাবার খেয়ে থাকি। প্রোটিন শরীরের
জন্য একটি অপরিহার্য পুষ্টি উপাদান এটি শরীরে কোষ গঠন মেরামত এবং রক্ষণাবেক্ষণে
গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। প্রোটিন সমৃদ্ধ খাবার শরীরে কর্মক্ষমতা বাড়াতে
সাহায্য করে এবং দীর্ঘ সময় পেট ভরা রাখে। প্রোটিন সমৃদ্ধ খাবারের তালিকা দেয়া
হলো। দুধ ,ডিম, মাছ, ডাল, সয়াবিন ,পনির, দই, বীজ।
ওমেগা থ্রি এসিড সমৃদ্ধ খাবার খান
ওমেগা থ্রি এসিড স্বাস্থ্যের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ যার হৃদরোগ মস্তিষ্কের
উপকারিতা এবং প্রদাহ কমাতে সাহায্য করে। এই এসিড শরীরে তৈরি হয় না তাই খাবার
থেকে গ্রহণ করতে হয়, নিচে অনেক সমৃদ্ধ দশটি খাবার ও তাদের উপকারিতা নিয়ে আলোচনা
করা হলো।
১, শ্যামল মাছঃ-ওমেগা থ্রি ফ্যাটি এসিডের একটি চমৎকার উৎস হিসেবে কাজ করে ইপিএ এবং ডিএইচে।
২, সাডিনঃ ছোট মাছ হলেও সাডিনে প্রচুর পরিমাণে ওমেগা থ্রি থাকে
৩, মেকারেলঃ
এটা একটি তৈলাক্ত মাছ যা ওমেগা থ্রি সমৃদ্ধ
৪,টুনা মাছ ঃএটা একটি জনপ্রিয়
মাছ ওমেগা থ্রি এর ভালো উৎস থাকে এর মধ্যে
৫,তিশি বিজঃ উদ্ভিদ উৎস থেকে
ওমেগা থ্রি পেতে চাইলে তিশি বিজ একটি ভালো বিকল্প
৬,চিয়া বিজঃ কৃষি বিজে
থাকা প্রচুর পরিমাণে আলফা লিননেরিক এসিড থাকে যা ওমেগা থ্রী একটি প্রকার
৭,
আখরোটঃ আখরোটেও এন এল ওমেগা থ্রি পাওয়া যায়
৮, সয়াবিন ঃ রান্না এবং
সালাদের ব্যবহার করা যেতে পারে সয়াবিন
৯, সিমের বিজঃ এটি একটি উদ্ভিদ
উৎস যা ওমেগা 3 সরবরাহ করে
১০, পালং শাকঃ অন্যান্য পুষ্টি উপাদানের
সাথে সাথে এতেও কমে গেছে
এই খাবারগুলি নিয়মিত খেলে হৃদরোগ মানসিক স্বাস্থ্য ও সামগ্রিক স্বাস্থ্যের
উন্নতি হতে পারে। এই খাবারগুলো নিয়মিত খেলে শরীরের হরমোন ঘাটতি পূরণের
সহায়তা করে
আয়রন সমৃদ্ধ খাবার খান
আয়রন সমৃদ্ধ খাবার বলতে ডিমের কুসুম মাংস বিশেষ করে কলিজা মাছ যেমন সিং মাগুর
টাকি সিম পালং শাক এবং শুকনো ফল। যেমন খেজুর কিসমিস এই খাবারগুলো প্রচুর
পরিমাণে আয়রন পাওয়া যায় আয়রন শরীরের জন্য একটি অত্যন্ত প্রয়োজনীয় উপাদান
যা শরীরের অক্সিজেন পরিবহনের সাহায্য করে। এবং রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়
গর্ব অবস্থায় মহিলাদের শরীরের আয়রনের চাহিদা বাডে । তাই খাদ্য তালিকায় এই
খাবারগুলো যোগ করে আয়রনের অভাব পূরণ করা যায় ভিটামিন সি সমৃদ্ধ খাবার আয়রন
শোষণের সাহায্য করে তাই কমলালেবু পেয়ারা ইত্যাদি ভিটামিন সি সমৃদ্ধ খাবার
আয়রন সমৃদ্ধ খাবারের সাথে খাওয়া উচিত।
পূর্ণাঙ্গালোচনার শেষ অংশ
শেষ কথা বলতে শরীরের জন্য আয়রন একটি অপরিহার্য পুষ্টি উপাদান এটি শরীরের
বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ কাজে লাগে।যেমন লোহিত রক্তকণিকার তৈরি করা এবং অক্সিজেন
পরিবহনের সাহায্য করে রক্তস্বল্পতা সহ বিভিন্ন সমস্যা দেখা দিতে পারে। তাই সুষম
খাদ্য গ্রহণের মাধ্যমে হিমোগ্লোবিন নামক একটি প্রোটিন তৈরিতে সাহায্য করে একটি
গুরুত্বপূর্ণ উপাদান বিভিন্ন অংশ অক্সিজেন পরিবহনের সাহায্য করে। আইরন প্রতিরোধ
ক্ষমতা বৃদ্ধিতে সাহায্য করে পর্যাপ্ত আয়রন শরীরের রোগ সৃষ্টিকারী করতে
সাহায্য ক... শরীরে আয়রনের অভাব হলে রক্তস্বল্পতা হতে পারে এবং এর ফলে
দুর্বলতা ক্লান্তি শ্বাসকষ্ট এবং মনোযোগ কমে যাওয়ার মত উপসর্গ দেখা দিতে
পারে।
শরীরের জন্যএটি পুষ্টি উপাদান শরীরে আয়রনের অভাব হলে বিভিন্ন স্বাস্থ্য সমস্যা
সৃষ্টি হতে পারে। তায় প্রয়োজনীয় চিকিৎসকের পরামর্শ নিয়ে শরীরের আয়নের অভাব
পূরণ করা উচিত। সুস্থ থাকতে হলে শরীরের পর্যাপ্ত পরিমাণ আয়রন সরবরাহ নিশ্চিত
করা প্রয়োজন তাই আসুন আমরা উপরে আলোচিত খাবার গুলো নিয়মিত খাদ্য তালিকায়
রাখি। এবং শরীরে আয়রনের ঘাটতি পূরণে ভূমিকা রাখি তাহলেই আল্লাহ তায়ালা
আমাদেরকে সকল রোগ থেকে মুক্তি দান করবে ইনশাআল্লাহ।
অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url