জেনে নিন কোন রোগ সারাতে কোন কোন শাক খেতে হয়।

 জেনে নিন কোন রোগ সারাতে কোন কোন শাক খেতে  হয়।

ভূমিকা

শাক সবজি আমাদের খাদ্য তালিকায় একটি অপরিহার্য অংশ। এগুলোতে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন খনিজ এবং ফাইবার থাকে যা শরীরের জন্য খুবই প্রয়োজন। সুস্থ থাকতে প্রতিদিনের খাদ্য তালিকায় শাক সবজি রাখা উচিত,এটি হজম ক্ষমতা বাড়ায, এবং বিভিন্ন রোগ থেকে শরীরকে রক্ষা করে সুস্বাস্থ্যের জন্য শাকসবজি খাওয়া গুরুত্ব অপরিসীম। ডায়াবেটিস সহ নানা অসুখ থেকে রক্ষা পাওয়া যায়, এছাড়া এটি শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে সাহায্য করে। আমাদের দৈহিক ও মানসিক বিকাশের সহায়ক তাই সুস্থ সুন্দর জীবনের জন্য শাকসবজি খাওয়ার অভ্যাসে পরিণত করা আমাদের সকলেরই দরকার।

আসুন নিচে আমরা পর্যায়ক্রমে জেনি নিজে কোন শাকসবজিতে কোন ধরনের উপকার আছে

রক্ত বাড়াতে এলেঞ্চার শাক খাবেন

এই শাক একটি পরিচিত জলজ উদ্ভিদ যা বিভিন্ন ভেষজ ও পুষ্টিগুণে ভরপুর,এটি সাধারণত শাক হিসেবে খাওয়া হয় এবং এর বহুবিধ উপকারিতা রয়েছে বিশেষ করে কোষ্ঠকাঠিন্য হাঁপানি স্নায়ু রোগ এবং ত্বকের বিভিন্ন সমস্যার সমাধানে এটি বেশ কার্যকর। কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করতে সাহায্য করে এবং হজমের প্রক্রিয়া উন্নত করতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। শ্বাসকষ্ট বা হাঁপানি সমস্যার সমাধান্রত এই শাক একটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে থাকে। নিয়মিত খেলে রক্তের হিমোগ্লোবিনের পরিমাণ বৃদ্ধি পায় যার শরীরের দুর্বলতা কমাতে সহায়ক এছাড়াও পেটের জ্বালাপোড়া বদহজম ইত্যাদি  সমস্যার সমাধানে বেশ উপকারী।


ফ্যাটি লিভার ভালো করতে কলমী শাক

আমাদের দেশের  পরিচিত শাকের মধ্যে কলমি শাক হলো সবচাইতে পরিচিত একটি শাক। এটা পুষ্টিগুণে ভরপু্র অন্যান্য সাগের ভিড়ে এই শাক খুব একটা কদর পায় না অবহেলিত এই শাকি আপনার শরীরের নানা উপকার করতে পারে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন কলমি আগে রয়েছে বিভিন্ন রকম উপাদান  যে কারণে এই শাক খেলে অনেক রোগ থেকে দূরে থাকা সম্ভব । লিভার ভালো রাখতে কলমি শাক বেশ কার্যকারী যাদের ফ্যাটি লিভার সমস্যা রয়েছে তাদের জন্য এই শাক যাদুর মত কাজ করে। বিশেষ করে ফ্যাটি লিভার দূর করতে। গবেষণায় দেখা গেছে কলমি শাকে থাকা কিছু উপাদান লিভার থেকে ক্ষতিকর পদার্থ বের করে দেয় সেই সঙ্গে ড্যামেজ লিভার সুস্থ করার ক্ষেত্রেও এটি কার্যকারী। লিভারের সমস্যায় ভুগলে তারা কলমি শাক রাখতে পারেন খাবারের তালিকায়।

শরীরের ব্যথা দূর করতে সাঞ্চি শাক খান

সানচি  শাকে থাকা উপাদান শরীরের ব্যাথা কমাতে সাহায্য করে। বিশেষ করে ঘাড়ের ব্যথা বেশির ব্যথা এবং অন্যান্য শারীরিক ব্যথায় এটি আরাম দেয়। এই শাকের উপস্থিতি এন্টি ইনপ্ল্যানেটি উপাদান প্রদাহ কমাতে সহায়ক। এটির শরীরে বিভিন্ন অঙ্গে ব্যথা কমাতে সাহায্য করে। আরো রয়েছে ক্যালসিয়াম ও অন্যান্য উপাদান যা হাড়ো পেশি মজবুত করে। আমাদের সমাজে ৪০ বছরের ঊর্ধ্বে প্রায় লোকেরই হাঁটু ব্যথা কোমর ব্যাথা পেশির  ব্যথা এ সকল ব্যথা দূর করতে কলমি শাকের ভূমিকা অপরিসীম।

হাড় ও পেশি মজবুত করতে লাল শাক 

লাল শাক একটি জনপ্রিয় এবং পুষ্টিকর সবজি যা শরীরের জন্য অনেক উপকারিতা বয়ে আনে এতে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন এ, ভিটামিন সি,, আয়রন এবং ফাইবার রয়েছে নিয়মিত লাল শাক খেলে হজম শক্তি বাড়ে।রক্তস্বল্পতা দূর হয় হৃদরোগের ঝুঁকি কমে এছাড়াও এটি রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে সাহায্য করে।সবচাইতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে হার ও পেশি মজবুত করতে লাল শাকের ভূমিকা অপরিসীম। এ সকল উপকারিতার জন্য সুস্বাদু লাল শাক আমাদের খাদ্য তালিকার যোগ করতে হবে প্রতিদিন। এই শাক স্বাস্থ্যের জন্য খুবই উপকারী।


  • পেটের সকল রকমের রোগ সারাতে থানকুনি পাতা

থানকুনি পাতা একটি ভেষজ উদ্ভিদ যা প্রাচীনকাল থেকে আয়ুর্বেদ ইউনিয়নের ও প্রাকৃতিক চিকিৎসায় ব্যবহৃত হয়ে আসছে।এটি বিভিন্ন ধরনের রোগ প্রতিরোধ ও নিরাময়ে কার্যকারী ভূমিকা পালন করে বিশেষ করে থানকুনি পাতা পেটের সকল রকম রোগ সারাতে জাদুর মত কাজ করে। থানকুনি পাতা গ্যাস্টিক ডায়রিয়া বদহজম অম্বলের মত পেটের সমস্যা দূর করতে খুবই উপকারী। এটি হজম শক্তি বাড়ায় এবং অন্ত পরিষ্কার করে। থানকুনি পাতা নিয়মিত খেলে লিভার বা যকৃত পরিষ্কার থাকে টক্সিন কমে যায় ফলে শরীর থাকে সুস্থ ও সতেজ। থানকুনি পাতা নিয়মিত খেলে এখানে মস্তিষ্কের কার্যকারিতা বাড়ায় স্মরণ শক্তি বৃদ্ধি একাগ্রতা উন্নত ও মানসিক চাপ কমাতে সাহায্য করে।  নিয়মিত ওষুধ সেবন করলে থানকুনি পাতা খাওয়ার আগে ডাক্তারের পরামর্শ নেয় ভালো অতিরিক্ত খেলে বমি বা পেট খারাপ হতে পারে।

মুখের রুচি বাড়াতে কুমড়ো শাক খান

কুমড়ো সাগরে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে আয়রন ও ক্যালসিয়াম যার শরীরকে শক্তি দেয়। কুমড়ো সাগে থাকা ফাইবার হজমে সাহায্য করে। এবং ক্ষুধা বাড়ে  এটি হজম শক্তি উন্নত করে কার্যকারিতা বাড়িয়ে দেয় যা খাবারের প্রতি আকর্ষণ তৈরি করে। এতে থাকা ভিটামিন  লিভারের কার্যকারিতা বাড়িয়ে দেয় যা খাবারের প্রতি আকর্ষণ তৈরি করে। যারা দীর্ঘদিন অরুচিতে ভুগছেন তাদের জন্য এটি প্রাকৃতিক সমাধান এবং খাবারের মন বসতে সাহায্য করে,  পুষ্টিগুনে ভরপুর তাই প্রতিদিনের খাদ্য তালিকায় যোগ করতে পারেন কুমড়া শাক। এবং এইসাকে থাকা এন্টিঅক্সিডেন্ট শরীর সুস্থ রাখে কুমড়া শাক পাকস্থলীর তাপ নিয়ন্ত্রণ করে ফলে রুচি বাড়ে। মুখের অম্ল ভাব দূর করে দেয়।


পেটের চর্বি কমাতে লাউ শাক

দেশে উৎপাদিত প্রায় সকল শাক সবজিতে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে রকম নানারকমের ভিটামিন বা পুষ্টিগুণ।পেটের চর্বি কমাতে লাউশাক একটি চমৎকার খাদ্য এতে ক্যালোরি ও ফ্যাট কম থাকে যা ওজন কমাতে সহায়ক। লাও শাকে প্রচুর পরিমাণে ফাইবার আছে যা হজম ক্ষমতাকে উন্নত করে এবং পেট ভরা রাখে ফলে অতিরিক্ত খাওয়া কম হয়। এছাড়া লাও শাককে ভিটামিন ও মিনারেল রয়েছে যা শরীরের জন্য প্রয়োজনীয় পুষ্টি সরবরাহ করে। নিয়মিত লাউ শাক খেলে পেটের চর্বি কমানোর পাশাপাশি সামগ্রিক স্বাস্থ্য ভালো থাকে। লাউ শাকে ক্যালরি পরিমাণ খুব কম যা ওজন কমাতে সহায়ক।


এছাড়াও লাউশাকে ভিটামিন এ ভিটামিন সি এবং ভিটামিন কে সহ বিভিন্ন ভিটামিন ও খনিজ পদার্থ রয়েছে।রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধিতে লাউশাকএ থাকা অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে সাহায্য করে।হাড়ের গঠন মজবুত করে লাও শাক রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণেও কাজ করে। লাউ শাকে থাকা ম্যাগনেসিয়াম শরীরের হাড়কে মজবুত করে লাও শাকে থাকা ভিটামিন ও মিনারেল ত্বকের স্বাস্থ্যের উন্নতি ঘটায়।

সর্বশেষ আলোচনা

সর্বশেষ আলোচনা বলতে আমরা উপরে আলোচ্য বিষয়গুলো বিবেচনা করে এই সিদ্ধান্তে উপনীত হতে পারি যে, আমাদের এই দেশীয় সবজিগুলো আমাদের শরীরে বিভিন্ন রকম ভাবে উপকারে সহায়ক। তাই আমাদের সকলের উচিত প্রতিদিনের খাদ্য তালিকায় কোননা কোন  সবজি যুক্ত করা। শুধু ডাক্তার বা ওষুধের উপর ভরসা করে থাকলে শরীরের সঠিক যত্ন নেয়া সম্ভব নয়। তাই আমাদের উচিত আল্লাহর তৈরি মানুষের উপকারের জন্য যে শাকসবজি গুলো আল্লাহ আমাদেরকে দান করেছেন এই সবজিগুলোকে আমরা নিয়মিত খেলে আমাদের আর ডাক্তার বা ওষুধের উপর নির্ভর করতে হবে না। এছাড়া ডাক্তার বা ওষুধ খেলে শরীরের বিভিন্ন পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া দেখা দিতে পারে তাই আমাদের উচিত হবে যতদূর সম্ভব ওষুধ বা ডাক্তার এরিয়া চলা। নিয়মিত এই সবজিগুলো আমরা যদি খেতে পারি তাহলে আমাদের শরীরের বিভিন্ন রকম সমস্যা দূর করার সহজ শরীরের শক্তি সঞ্চার হবে ইনশাল্লাহ।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url