আগামী আরবি মাস হলো সাফর হিজরী ২০২৫
সাফরের বিশেষ দিন: আরবী ক্যালেন্ডারে সাফর মাসে কি আছে?
সাফর মাসে মূলত দুটি উল্লেখযোগ্য ঘটনা রয়েছে:
-
১ সাফর – হিজরী বছর হিসেবে দ্বিতীয় মাসের শুরুর দিন।
-
২০ সাফর (বা ২১ সাফর) – আরব্বেইন, যা আশুরার ৪০তম দিন। এই দিনটি ইমাম হোসেন (রাঃ) ও কারবালার শহীদের স্মরণে শিয়া সম্প্রদায়ে বিশেষ গুরুত্ব পায় । গ্রীষ্মের নির্দিষ্ট বছর অনুযায়ী, এটি ১৪ আগস্ট বা ১৫ আগস্ট ২০২৫ তারিখে পড়ছে।
সাফর মাসের গুরুত্ব ও আরব্বেইন উপলক্ষ্যে"
ভূমিকা
ইসলামী চাঁদভিত্তিক হিজরি ক্যালেন্ডারটি মহানবী মুহাম্মদের (সা.) হেজরা, অর্থাৎ মক্কার থেকে মদিনায় অভিবাসনের ভিত্তিতে শুরু। এই ক্যালেন্ডারে মুহররম প্রথম মাস, তারপরে আসে সাফর। সাফর মাসে অনেক ভাব, ঐতিহ্য ও আধ্যাত্মিক গুরুত্ব বিদ্যমান, বিশেষ করে সেই মাসটির প্রথম ও মাঝামাঝি দিনগুলোতে ।
পেজ সূচিপত্র
১. সাফর মাসের আরম্ভ: ১ সাফর
-
তারিখ: খ্রিস্টাব্দ ২৬ জুলাই ২০২৫ (প্রায়)।
-
মহত্ব: এটি হিজরি বছরের দ্বিতীয় মাসের উদ্ধোধনী, যা মুসলমানদের জন্য নতুন ইচ্ছা ও পরিকল্পনার মাস। অনেকেই এই দিনে নিত্যনতুন শুরু ও আল্লাহর রহমতের জন্য দোয়া করেন।
২. আরব্বেইনের গুরুত্ব (২০ বা ২১ সাফর)
-
তারিখ: আনুমানিক ১৪–১৫ আগস্ট ২০২৫
-
ইতিহাস: এটি আশুরা (১০ মুহররম) থেকে পঞ্চাশ দিনের মধ্যে ৪০তম দিন হিসেবে নির্বাচিত। শিয়া সম্প্রদায়ে এটি ইমাম হোসেন (রাঃ)-এর কারবালায় শহীদের স্মরণে বিশেষ গুরুত্ব পায়।
-
অনুশীলন: পবিত্র কোরআনের tilawat, দোয়া, ধর্মীয় সমাবেশ, ওয়াকফার প্রার্থনা, মেধ ফাদাকাত ইত্যাদি। অনেক শিয়া উম্মাহ পুণ্যের জন্য ৪০ দিন ... ৪০ রাত মোনাজাত শোনায় ও ধর্মচর্চা করেন।
-
সামাজিক প্রভাব: খাবারও বিতরণ করা হয় দরিদ্রদের মাঝে, যা মানবকল্যাণ ও ঐক্যের প্রতীক।
৩. নিরাশ্রয়দের পরোয়া ও অহংকারের বিপরীতে মর্মতাত্ত্বিক আহ্বান
ইসলাম ধর্মে অলৌকিক ঘটনাবলীর মাধ্যমে উত্থাপিত দিনগুলোতে মানবতা, সহানুভূতি, আত্ম-সংযম ও আত্মপুনর্বিবেচনার মাধ্যমে সামাজিক দায়িত্ব প্রতিফলিত হয়। সাফর মাসে:
-
দান–পুন্য ও ইবাদতে মনোনিবেশ।
-
দুঃখী-দরিদ্রদের পাশে দাঁড়ানো।
-
ব্যক্তিগত ও সামাজিক উন্নতির পথ খোঁজা।
৪. অন্যান্য অলৌকিক ও ঐতিহ্যগত বিশ্বাস
সাফর মাস নিয়ে কিছু লোকের মধ্যে ভিত্তিহীন বিদ্যাবহুল ভয় কাজ করে – যেমন “অশুভ মাস” বা “কালো দিন” ইত্যাদি। কিন্তু শরীয়তে এই বিষয়ে কোনো ভিত্তি নেই।
-
হাদীসে এমন কোনো নির্দেশনা নেই।
-
বরং ভাইরাস ও প্রতিকূলতার সম্মুখীন হলে যথাযথ ইবাদত ও দোয়া সাহায্য করে ।
৫. সাফর মাসে পালনযোগ্য কিছু আমল
-
বিভিন্ন নফল নামাজ ও কোরআন তেলাওয়াত – বিশেষ করে যারা জীবনে সমালোচনা ও সামাজিক নির্যাতনের সম্মুখীন হন।
-
জাকাত ও ফজিলতের দান – মেধাবান ও ধনী মানুষদের দায়িত্ব।
-
পরিবার ও সমাজে শান্তি ও সহমর্মিতা প্রতিষ্ঠা।
৬. স্থানীয় ও সাম্প্রতিক উদাহরণ
বাংলাদেশের বিভিন্ন জায়গায়:
-
শিয়া সম্প্রদায়ে আরব্বেইনে বড় সমাবেশ হয়, ঢাকায় বলুন বড় মিছিলে।
-
সাধারণ মুসলিমরা এই দিনে দোয়া ও নফল ইবাদত বৃদ্ধি করে।
-
অনেক এলাকায় দরিদ্রদের মধ্যে খাবার বিতরণ, চাঁদা সংগ্রহ, দোয়া মাহফিল আয়োজনের প্রচলন দেখা যায়।
৭. উপসংহার
সাফর মাস শুধুমাত্র দ্বিতীয় মাস নয়; এটি আমাদেরকে সতর্ক করে দেয় সামাজিক দায়বদ্ধতা, পারস্পরিক সহানুভূতি ও ধর্মচর্চার গুরুত্ব মনে করিয়ে, বিশেষ করে আশুরার ৪০তম দিন আরব্বেইন উপলক্ষে। এই মাসে:
-
আমরা স্মরণ করি কারবালার শহীদের আত্মত্যাগ।
-
মানবতা ও মানবাধিকারের প্রতীক হিসেবে করুণা ছড়িয়ে দিই।
-
নিজেকে ও সমাজকে নৈতিকভাবে উন্নত করি।
এই মূল্যবোধগুলো আগামী ২৬ জুলাই থেকে শুরু হবে নতুন আধ্যাত্মিক যাত্রার সূচনা—যা আমাদের জীবন ও সমাজকে পরিবর্তনে দারুণ ভূমিকা রাখবে।
অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url