ইসলামিক কিছু উপদেশ মূলক কথা

  •  ইসলামিক কিছু  উপদেশ মূলক কথা

কিছু কথা জেনে রাখুন

আল্লাহর প্রতি অগাধ বিশ্বাস ও ভরসা রাখুন, কারণ তিনি একমাত্র সাহায্যকারি, ধৈর্য ধরুন কারণ বিপদ ও  কষ্টের পর স্বস্তি আসবেই সৃষ্টিকর্তার প্রতি কৃতজ্ঞ থাকুন। আপনার যা কিছু আছে তাতেই সন্তুষ্ট থাকুন। এবং আল্লাহর প্রতি শুকরিয়া আদায় করুন। আল্লাহর সৃষ্টি প্রত্যেকটি মাখলুকের উপর দয়া করুন অন্যের প্রতি সদয় ও সহনশীল হন। কারণ এটি আপনার জন্য একটি মূল্যবান গুণাবলী।

সত্যের পথে অবিচল থাকুন। মিথ্যা ও অন্যায়ের পথ পরিহার করুন, মনে রাখবেন মিথ্যা সকল ধ্বংসের
 মূল। ইসলামের প্রতি সঠিক জ্ঞান অর্জনের সচেষ্ট হন, কারণ জ্ঞান মানুষকে সঠিক পথ দেখাই,  অপচয় ও অপব্যয় পরিহার করুন। আল্লাহর দেয়া সম্পদকে সঠিক কাজে ব্যবহার করুন। 

ক্ষমাশীল হোন কারণ ক্ষমা মহত্ত্বের প্রতিক। বিনয়ী হোন অহংকার পরিহার করুন। আল্লাহকে বেশি বেশি স্মরণ করুন এটি অন্তরের প্রশান্তি এনে দেবে। এই উপদেশ গুলো মেনে চলুন চললে জীবন সুন্দর ও অর্থবহ হবে ইনশাআল্লাহ। 

সূচিপত্র

১, নামাজ কি
২, ইসলামের দৃষ্টিতে নামাজের গুরুত্ব কতখানি
৩, নামাজ কার হুকুম
৪, নামাজ কেন পড়তে হয়
৫, নামাজের ফজিলত বা লাভ কি
৬, নামাজ না পড়লে শাস্তিকি 
৭, নামাজ কি বেহেস্তের চাবি
৮, মেয়েদের নামাজ কিভাবে পড়তে হয়
৯,  নামাজ কিভাবে আসলো

আসুন বিস্তারিত আলোচনা গুলো জানা যাক।

নামাজ কি

নামাজ হলো ইসলামের একটি গুরুত্বপূর্ণ স্তম্ভ। যা প্রত্যেকটি মুসলমান নর নারীর উপর ফরজ করা হয়েছে। এটি আল্লাহর সাথে বান্দার একটি বিশেষ সম্পর্ক স্থাপন করে এবং একজন মুসলিমের দৈনন্দিন জীবনে একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ হলো নামাজ। নামাজ বা সালাত শব্দের অর্থ হলো, দোয়া, রহম্‌ত ক্ষমা, প্রার্থনা করা ইত্যাদি একটি নির্দিষ্ট সময়ের কিছু নিয়ম ও পদ্ধতির মাধ্যমে আল্লাহর কাছে আত্মসমর্পণের একটি উপায়। 

ইসলামে নামাজকে দৈনিক পাঁচ ওয়াক্তে ভাগ করা হয়েছে, ফজর, যোহর,  আছর, মাগরিব, ও এশা প্রত্যেক ওয়াক্তের নামাজ কিছু নির্দিষ্ট সময় এবং নিয়মের মধ্যে আদায় করতে হয়।
নামাজ পড়া প্রত্যেক মুসলমান নর ও নারীর উপরে ফরজ বা অবশ্য পালনীয়। এটি আল্লাহ সন্তুষ্টি লাভের একটি অন্যতম মাধ্যম। এবং এর মাধ্যমে একজন মুসলিম আল্লাহর আরো কাছাকাছি যেতে পারে। এক কথায় একজন প্রাপ্তবয়স্ক নর এবং নারীর উপরে নামাজ আল্লাহ তায়ালা ফরজ করেছেন নামাজ আদায় করা মুসলমানদের উপর বাধ্যতামূলক করা হয়েছে।

ইসলামের দৃষ্টিতে নামাজের গুরুত্ব কতখানি

ইসলামে নামাজের গুরুত্ব অপরিসীম- নামাজকে ইসলামের স্তম্ভ গুলোর মধ্যে দ্বিতীয় এবং বান্দার জন্য আল্লাহর সবচেয়ে প্রিয় ইবাদত হিসেবে বিবেচনা করা হয়। এটি মুসলিম বান্দার উপর ফরজ এবং এর মাধ্যমে আল্লাহর সন্তুষ্টি ও পরকালে মুক্তি লাভ করা যায়। ইসলামে পাঁচটি স্তম্ভের মধ্যে এবং প্রত্যেক মুসলমান নর নারীর জন্য পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ আদায় করা ফরজ ও আবশ্যক। 

নামাজ কার হুকুম

নামাজ আল্লাহর হুকুম, আল্লাহ তাআলা প্রত্যেকটি মুমিন নর এবং নারীর উপরে দৈনিক পাঁচ
 ওয়াক্ত নামাজ আদায় করার জন্য হুকুম দিয়েছেন। এবং এই হুকুম পালন করা প্রত্যেকটা মুমিন ব্যক্তির জন্য ফরজ, ইসলামে আল্লাহর হুকুম যারা অমান্য করবে তাদের জন্য দুনিয়া এবং আখিরাতে কঠিন থেকে কঠিনতর শাস্তির ব্যবস্থা করেছেন আল্লাহ তা'আলা। সুতরাং প্রত্যেক মুমিন বান্দা যেন প্রতিদিন পাঁচ ওয়াক্ত ফরজ নামাজ আদায় করে। 

নামাজ কেন পড়তে হয়

নামাজ পড়া প্রত্যেক মুসলমানের জন্য ফরজ এবং বাধ্যতামূলক। নামাজের মাধ্যমে বান্দা আল্লাহর কথা স্মরণ করে এবং তার সান্নিধ্য লাভ করে নামাজের মাধ্যমে বান্দা তার সৃষ্টিকর্তার সাথে সরাসরি যোগাযোগ স্থাপন করতে পারে। নামাজ অশ্লীল ও অন্যায় কাজ থেকে বিরত রাখে এবং বান্দাকে পরিশুদ্ধ করে। নামাজের মাধ্যমে মুমিন ব্যক্তি আল্লাহর খুব কাছাকাছি চলে যায়।

নামাজের ফজিলত বা লাভ কি

নামাজের ফজিলত অনেক, প্রথমত বলা যায় নামাজ আদায় করলে ইহকালে শান্তি পরকালেও শান্তি। নামাজ পড়ার মাধ্যমে শারীরিক ও মানসিক শান্তি লাভ করা যায়, গুনাহ থেকে মুক্তি পাওয়া যায্‌ এবং পরকালে জান্নাত লাভের আশা করা যায়, নামাজ মানুষকে অশ্লীল ও গুনাহের কাছ থেকে বিরত রাখে নিয়মিত নামাজ পড়লে গুনাহ মাফ হয় এবং আল্লাহর রহমত লাভ করা যায় ।নামাজ আত্মাকে প্রশান্তি এনে দেয় এবং মনকে শান্ত করে নিয়মিত নামাজ পড়লে মানসিক চাপ ও উদ্বেগ কমে যায়।

ওযু নামাজের চাবি, নামাজ বেহেস্তে, চাবি যারা নিয়মিত নামাজ আদায় করে তারা জান্নাতের সম্মানিত স্থান লাভ করবে বলে হাদিসে উল্লেখ আছে।

নামাজ না পড়লে শাস্তি কি

বলা হয়েছে নামাজ না পড়লে ছয় শাস্তি দুনিয়াতে, নামাজ প্রতিটি মুসলমানের উপর ফরজ এবং বাধ্যতামূলক। নামাজ ছাড়া ইহকালীন ও পরকালীন মুক্তি অসম্ভব নামাজ পাপাচার থেকে মুক্ত রাখে স্বচ্ছ সুন্দর ও স্বাচ্ছন্দ্যময় জীবন লাভ হয়। আল্লাহ বলেন নিশ্চয়ই নামাজ অশ্লীল ও অন্যায় কাজ থেকে বিরত রাখে  ( সূরা' আনকাবুত, আয়াত ৪৫)

আল্লাহ তাআলা অন্য এক আয়াতে  সময় মত নামাজ আদায় করতে বলেছেন। নিশ্চয়ই নামাজ মুমিনদের জন্য সুনির্দিষ্ট সময়ের সাথেই ফরজ করা হয়েছে (সূরা' আল নিসা, আয়াত১০৩)। নামাজ না পড়লে শুধু পরকালেই নয় দুনিয়ার জীবনেও নেমে আসে অশান্তি, হতাশা, অভাব অনটন, দুঃখ-কষ্ট দুনিয়ার জীবনে বেনামাজির জন্য পাঁচটি শাস্তির কথা বলা হয়েছে । 

১, আল্লাহ তাআলা নামাজ ত্যাগকারীকে দুনিয়ার জীবনে সব কাজের বরকত থেকে মাহরুম/ বঞ্চিত করেন। হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে ওমর রাদিয়াল্লাহু আনহু বলেন রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাই সাল্লাম বলেছেন যে ব্যক্তি আসরের সালাত কাজা করলো তার পরিবার পরিজন ধন-সম্পদ সবই যেন ধ্বংস হয়ে গেল । (মুসলিম, হাদিস -১৩০৪) 

২, নামাজ ত্যাগ করা ব্যক্তির চেহারায় কোন নূর বা উজ্জ্বলতা থাকে না আবার যে ব্যক্তি ইচ্ছাকৃতভাবে নামাজ ছেড়ে দিবে সে যেন কুফরি করল( তিরমিজি, ২৬২০- আবু দাউদ- ৪৬৭৮)

৩, যে ব্যক্তির নামাজ ত্যাগ করল ওই ব্যক্তি দুনিয়াতে যত ভালো কাজই করুক তার কোন প্রতিদান পাবে না। নামাজ ত্যাগকারী ব্যক্তির জন্য কোন লোক দোয়া করলে তা কাজে আসবে না।

৪, নামাজ ত্যাগকারী ব্যক্তি দুনিয়ার প্রতিটি পদক্ষেপে আল্লাহ তায়ালা সব সৃষ্টি জীবের কাছে ঘৃণিত। কোন সৃষ্টি জীব তাকে পছন্দ করবে না।

৫, নামাজ ত্যাগ করা ব্যক্তি দুনিয়ার কোন ভালো কাজ করলে তা বরকতময় হবে না।

৬, নামাজ ত্যাগকারী ব্যক্তিকে আমাদের প্রিয় নবী হযরত মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কেয়ামতের দিন তার জন্য কোন সুপারিশ আল্লাহর কাছে করবে না। 

নামাজ  বেহেস্তের চাবি

হাদীসটি এই যে জাবের  ইগনু আব্দুল্লাহ রাদিয়াল্লাহু আনহু বলেন রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাই সাল্লাম বলেছেন জান্নাতের চাবি হল নামাজ আর নামাজের চাবি হল পবিত্রতা। নামাজকে বেহেস্তের চাবি বলা হয়।তবে এর অর্থ হল নামাজ জান্নাতে যাওয়ার একটি গুরুত্বপূর্ণ মাধ্যম এটি একটি রূপক শব্দ  যা নামাজের গুরুত্ব বোঝায়। তবে শুধুমাত্র নামাজ পড়লে বেহেস্তে যাওয়া যাবে এমন নয় ঈমান বিশ্বাস এবং অন্যান্য নেক আমলের সাথে নামাজ জান্নাতে যাওয়ার জন্য অপরিহার্য মাধ্যম ।

নামাজ ছাড়াও ইসলামের অন্যান্য বিধি-বিধান রয়েছে। যেমন রোজা, হজ্ব, যাকাত, এবং সওয়াবের কাজ করা বেহেশতে যাওয়ার জন্য জরুরী।

মেয়েদের নামাজ কিভাবে পড়তে হয়

নামাজ নারী পুরুষ উভয়ের জন্য ফরজ ইবাদত পুরুষের পাশাপাশি নারীদের সঠিক নিয়মে নামাজ পড়া জানাটা অতীব জরুরী। নবীজি হযরত মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাই সাল্লাম বলেন কেয়ামতের দিন সর্বপ্রথম বান্দার যে আমলের হিসাব নেয়া হবে সেটা হল নামাজ। সুতরাং বোঝা যায় নামাজ কত বড় একটি আমল।
  
নামাজ নারী পুরুষ উভয়ের বাধ্যতামূলক ইবাদত। তবে উভয়ের নামাজ আদায়ের নিয়মের কিছু ভিন্নতা রয়েছে কিভাবে দাঁড়াতে হবে কিভাবে হাত বাধতে হবে এবং অন্যান্য কাজগুলোই বা কিভাবে করতে হয় এ নিয়ে অনেক নারী দ্বিধা দ্বন্দ্বে থাকেন।

নারীদের সালাত সংক্রান্ত বিশেষ হুকুম, নারীদের সালাত আদায়ের আযানের একামত নেই, সালাতের সময় নারীরা চেহারা ব্যতীত অন্য শরীর ঢেকে রাখবে। রুকু আর সেজদায় নারীর শরীর গুটিয়ে রাখবে। নারীর ইমামতিতে নারীদের জামায়াত করা, নারীদের মসজিদে সালাত আদায়ের জন্য ঘর থেকে বের হওয়া বৈধ। 
  
আল্লাহ তাআলা বলেন আর তোমরা সালাত কায়েম করো যাকাত প্রদান কর। এবং আল্লাহ ও তাঁর রাসূলের আনুগত্য কর। এ নির্দেশ সকল মুসলিম নারীর জন্য সমানভাবে প্রযোজ্য কারণ সালাত ইসলামের দ্বিতীয় রোকন ইসলামের প্রধান স্তম্ভ। সালাত ত্যাগ করা কুফরী যা মানুষকে ইসলাম থেকে বের করে দেয়, যার সালাত নেই সে নারী হোক বা পুরুষ হোক দিন ও ইসলামে তার কোন অংশ নেই। 

 নামাজ কিভাবে আসলো

ইসলাম ধর্মে নামাজ আল্লাহর এক বিশেষ ইবাদত যা মেরাজের রাতে আল্লাহ তা'আলা কর্তৃক নির্ধারিত হয়। ৬১৯ খ্রিস্টাব্দে মেরাজের রাতে রাসূল সাঃ এর উপর পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ ফরজ করা হয়।
ইসলামে নামাজের গুরুত্ব অপরিসীম এটি আল্লাহর স্মরণ এবং বান্দার সঙ্গে তার সংযোগ রক্ষার একটি মাধ্যম। কুরআনে নামাজের বিষয়ে বহু আয়াত রয়েছে এবং হাদিসে এর ফজিলত সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করা হয়েছে। মোট কথা নামাজ আল্লাহর এক বিশেষ আদেশ যারা রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাই সাল্লাম এর মাধ্যমে উম্মতের উপর ফরজ করা হয় এবং এর মাধ্যমে আল্লাহর নৈকট্য লাভ করা যায়।

সর্বশেষ কথা হল

সর্বশেষ কথা হল আমরা মুমিন বান্দা আল্লাহর আদেশ-নিষেধ সবকিছু নিয়মমাফিক মেনে চলবো এবং আমাদের প্রিয় নবী হযরত মুহাম্মদ সাঃ এর দেখানো সঠিক পথ গুলো অনুসরণ করব এবং সেই পথে চলার চেষ্টাও করবে আল্লাহর আদেশ মানা দুনিয়াতে শান্তি আখেরাতেও শান্তি আমরা সবাই আল্লাহর হুকুম যথাযথভাবে পালন করব এবং অন্যকে পালনে উৎসাহিত করব।

নামাজ রোজার পাশাপাশি বড়দের সম্মান করবো ছোটদের স্নেহ করবো এবং পাপ কাজগুলো এড়িয়ে চলবো। অন্যায় থেকে বিরত থাকবো নিজে বিরত থাকবো এবং অন্যকে বিরত থাকার জন্য উৎসাহিত করুন। আল্লাহ তাআলা আমাদের সবাইকে আল্লাহর হুকুম পালন করা এবং নবীর দেখানো পথে চলার তৌফিক দান করুন আমীন। 

             

     
       
  
  
 
 

 







 



 
 




এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url